বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা শাহরুখ খানের ৫৯তম জন্মদিন আজ ((২ নভেম্বর)। এই বয়সে এসেও যেন আগের মতো তরুণই রয়ে গেছেন তিনি। এখনও ভিন্ন মাত্রার চরিত্রে একের পর এক সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে অনবরত ঝড় তুলে যাচ্ছেন দর্শকদের মনে। গুটি গুটি পায়ে হাঁটতে হাঁটতে আজকের এই অবস্থানে এসেছেন তিনি। যদিও অভিনেতার চলার এই পথ মোটওে সহজ ছিল না। তবে পরিশ্রম যে কখনও বিফলে যায় না, তা বার বার নিজের কাজ দিয়ে প্রমাণ করেছেন শাহরুখ।
বরাবরের মতো এবারও অভিনেতার জন্মদিনে থাকছে এলাহী আয়োজন। জন্মদিনের পার্টির জাঁকজমকে কোনো কমতি রাখছেন না শাহরখের প্রিয়তমা স্ত্রী গৌরী খান। আজ স্বপ্নের মহল ‘মান্নাত’-এ বসবে অভিনেতার জন্মদিনের আসর। ২৫০ জনের আয়োজন করেছেন তিনি। আলিয়া ভাট, রণবীর কাপুর থেকে শুরু করে সাইফ-কারিনার মতো বলিপাড়ার সব নামীদামি তারকারা থাকবেন পার্টিতে।
১৯৬৫ সালের ২ নভেম্বর নতুন দিল্লির এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শাহরুখ। তার বাবা মীর তাজ মোহাম্মদ খান এবং মা লতিফ ফাতিমা ছিলেন। অভিনেতার বাবা ভারতের নতুন দিল্লির পাঠান বংশোদ্ভূত।
ব্যক্তিগত জীবনে ছয় বছর প্রেম করার পর ১৯৯১ সালের ২৫শে অক্টোবর ঐতিহ্যগত হিন্দু রীতিতে গৌরী চিব্বারকে বিয়ে করেন শাহরুখ। গৌরী পাঞ্জাবি হিন্দু ধর্মাবলম্বী৷ বিয়ের পর নাম পরিবর্তন করে হন গৌরী খান। তাদের সংসারে তিন সন্তান। বড়পুত্র আরিয়ান খান, একমাত্র কন্যা সুহানা খান এবং ছোটপুত্র আব্রাম খান।
দিল্লীর থিয়েটার একশন গ্রুপের মধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু শাহরুখের। এরপর ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামাতে পড়াশোনা করেন তিনি। ‘দিল আশনা হেয়’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে অভিষেক হলেও শাহরুখের প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘দিওয়ানা’। সিনেমাটি মুক্তির পর ব্যাপক সফলতার পাশাপাশি ‘ফিল্মফেয়ার’ পুরস্কারও পা তিনি।
শাহরুখ খান ও তার ফ্যামিলি
এরপর ‘রাজু বানগেয়া জেন্টলম্যান’র মতো মেলো-রোমান্টিক ধারার চলচ্চিত্র পরিচিত এনে দেয় শাহরুখকে। ১৯৯৩ সালে ‘বাজিগর’ ও ‘ডন’ সিনেমায় খল চরিত্রে অভিনয় করে তাক লাগিয়ে দেন অভিনেতা। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
‘দিল ওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েনগে’, ‘কয়লা’, ‘পরদেশ’, ‘ইয়েস বস’, ‘দিল তো পাগল হেয়’, ‘দিল সে’, ‘কুছকুছ হোতা হেয়’, ‘বাদশাহ’, ‘মোহাব্বাতেন’, ‘কাভি খুশি কাভি গাম’, ‘দেবদাস’, ‘শক্তি’র মত চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সমালোচকদের কাছে বলিউড ‘বাদশাহ’র খেতাব পান তিনি।
ক্যারিয়ারের উত্থান পতন, মেরুদণ্ডের অপারেশন, বন্ধুদের বিশ্বাস ঘাতকতা কোনকিছুই রুখতে পারেনি শাহরুখের জয়রথ। পিছিয়ে পরলেও আবার রুখে দাড়িয়েছেন ছুটেছেন সুদুরে সন্ধানে।
‘স্বদেশ‘, ‘ভিরজারা‘, ‘চাক দে ইন্ডিয়া’, ‘ওম শান্তি ওম’, ‘রাওয়ান’, ‘জাব তাক হেয় জান’, ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’, ‘ফ্যান’, ‘রইস’, ‘জিরো’র মতো জনপ্রিয় সব চলচ্চিত্রে অনবদ্য অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে ১৪ বার পেয়েছেন ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার।
মাঝে লম্বা বিরতি দিয়ে পর্দায় ফেরেন শাহরুখ। ‘পাঠান’, ‘জাওয়ান’, ‘ডাংকি’র মতো সিনেমায় অভিনয় করে বক্সঅফিসে ঝড় তোলেন অভিনেতা। বিরতিতে থাকলেও যে তার জনপ্রিয়তায় এতটুকু ভাটা পড়েনি, তা আবারও প্রমাণ করেন এই অভিনেতা।
বহু পুরস্কার অর্জনের পাশাপাশি ভারত সরকারের ‘পদ্মশ্রী’, ফ্রান্স সরকারের ‘অদ্র দে আর্ত এ দে লেত্র’ সম্মাননার পাশাপাশি পৃথিবীর পাঁচটি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান সূচক ডক্টরেট ডিগ্রিও অর্জন করেছেন শাহরুখ।