জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২টি পাঠ্যবই ছাপানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করলেও নির্ধারিত সময়ে তা সম্পন্ন নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, আগামী মার্চের আগে শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে না।
প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির বই ছাপানোর কাজ শুরু হয়েছিল আগেই এবং বর্তমানে তা শেষ পর্যায়ে। এই বইগুলোর সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি। তবে অন্যান্য শ্রেণির বই ছাপানোর কার্যক্রম শুরু করতে যথেষ্ট বিলম্ব হয়েছে।
ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির কার্যাদেশ ও চুক্তিপত্র সম্পন্ন হওয়ার পর এই সপ্তাহেই বই ছাপার কাজ শুরু হয়েছে। এই দুটি শ্রেণির বইয়ের সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি।
চতুর্থ, পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশ ১০ ও ১১ ডিসেম্বর দেওয়া হলেও প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে এখনও প্রেস মালিকদের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়নি।
নবম ও দশম শ্রেণির বইয়ের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হলেও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর কার্যাদেশ দেওয়া বাকি। এসব শ্রেণির বই ছাপার কাজ কবে শুরু হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
এ বছর চুক্তির পর বই ছাপার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে মাত্র ৪০ দিন। অথচ আগের বছরগুলোতে ৭০ দিন সময় দিয়েও কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। এই অস্বাভাবিক চাপের কারণে প্রেস মালিকরা কাজ সময়মতো শেষ করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার এনসিটিবি ও প্রেস মালিকদের মধ্যে এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে জানুয়ারির প্রথম ১৫ দিনের মধ্যে অন্তত তিনটি করে বই (বাংলা, ইংরেজি ও গণিত) সরবরাহের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘যথাসময়ে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই, বিতরণ ও সরবরাহ বর্তমান সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকারমূলক কাজ। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত জুলাই-আগস্ট থেকে পাঠ্যবই ছাপার কাজ শুরু হলেও এ বছর বিলম্ব হয়েছে। ফলে সময়মতো বই সরবরাহে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
এই সংকটের ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই পেতে বিলম্ব হবে। এতে শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে প্রভাব পড়তে পারে। সংশ্লিষ্টরা দ্রুত সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।