কুমিল্লা সীমান্তের ওপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় জড়ো হচ্ছেন আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকর্মীরা। সেখানে বসে দেশবিরোধী চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। ফ্যাসিস্টদের এ ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রস্তুত ছাত্র-জনতা। যেকোনো মূল্যে আওয়ামী চক্রান্ত রুখে দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় সমন্বয়কদের। রোববার দুপুরে কুমিল্লার সমন্বয়ক রুবেল হোসাইন ও আবু রায়হান এসব তথ্য জানান। এদিকে ভারতে বসে প্রবাসী সরকার গঠনের নানা তথ্য-উপাত্ত পেয়ে এর প্রতিবাদে শনিবার রাতে কুমিল্লা নগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিল হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক সমন্বয়ক জানান, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দলের বহু নেতাকর্মী চোরাপথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নেয়। সেখানে গিয়ে তারা জড়ো হয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। বিশেষ করে কুমিল্লা সীমান্তের ওপারে ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিপুল সংখ্যক পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী জড়ো হয়েছে। তারা সেখানে শেখ হাসিনাকে এনে একটা প্রবাসী সরকার গঠনের পাঁয়তারা করছে। সম্প্রতি এসব খবর দেশে ছড়িয়ে পড়লে সোচ্চার হয়ে ওঠে ছাত্র-জনতা। যে কোনো মূল্যে আওয়ামী লীগের চক্রান্ত রুখে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সমন্বয়করা।
কুমিল্লার সমন্বয়ক রুবেল হোসাইন বলেন, কুমিল্লার সাবেক এমপি সন্ত্রাস-চাঁদাবাজের গডফাদার বাহাউদ্দিন বাহার ও তার মেয়ে সাবেক মেয়র তাহসিন বাহার সূচনা দেশ থেকে পালিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থান করছে। বাবা-মেয়ে মিলে সেখানে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের একত্রিত করার চেষ্টা করছে। তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের পলাতক বেশ কিছু কেন্দ্রীয় নেতাও রয়েছে। তারা সেখানে বসে দেশবিরোধী চক্রান্ত করছে। একটা প্রবাসী সরকার গঠনের পাঁয়তারা করছে। মূলত তারা দেশকে অস্থিতিশীল এবং দেশের জনসাধারণের ক্ষতি করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমরা তাদের এসব চক্রান্তের খবর পেয়েছি। যে কোনো মূল্যে দেশবিরোধী এ চক্রান্ত রুখে দেওয়া হবে। ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে কোনোভাবেই ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হবে না।
তিনি বলেন, রাতের অন্ধকারে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আওয়ামী লীগের খুনিরা ভারতে গিয়ে একত্রিত হচ্ছে। তাদেরকে কারা ইন্ধন ও আশ্রয় দিচ্ছে আমরা সবই জানি।
কুমিল্লার আরেক সমন্বয়ক আবু রায়হান বলেন, সীমান্তের ওপারে হাসিনার প্রেতাত্মারা একত্রিত হয়েছে। কিন্তু কোনো লাভ হবে না। আমরাও সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এবারের জবাব হবে শক্ত ও কঠিন। তাদেরকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার জন্য একটা বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিল করেছি। এখন তাদেরকে মোকাবিলা করার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছি। সামনের দিনে তারা যদি কোনো চক্রান্ত করে, আমরা তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেব না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, খুনি হাসিনা পালিয়ে গিয়েও বসে নেই। প্রতিনিয়তই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে আমরা খবর পেয়েছি, কুমিল্লা সীমান্তের ওপারে ত্রিপুরায় আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী জড়ো হয়েছে। সাবেক এমপি বাহার ও তার মেয়ে সেখানে বসে ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট ভাষায় তাদেরকে বলে দিতে চাই, তাদের ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা কখনোই বাংলার মাটিতে সফল হবে না। ফ্যাসিবাদের দালাল ছাত্রলীগ, যুবলীগ, টোকাই লীগ, বাংলাদেশের কোথাও পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করলে তাদেরকে শক্ত হাতে দমন করা হবে।
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, কুমিল্লার মাটি ব্যবহার করে ফ্যাসিবাদী শক্তি চক্রান্ত করতে চায়। আমরা প্রস্তুত আছি। তাদেরকে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রয়োজনে কুমিল্লা থেকেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।