বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনতে জাতিসংঘের সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ। সেইসঙ্গে চলমান সংস্কার কার্যক্রম কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ও নীতিগত সহায়তারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল ফর ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স লি জুনহুয়া-এর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনা সরকারের একটি শীর্ষ অগ্রাধিকার এবং পররাষ্ট্র সচিব কর ফাঁকি ও অবৈধ আর্থিক প্রবাহ রোধে জাতিসংঘ থেকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব “জুলাই-আগস্ট বিপ্লব”-এর আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গৃহীত বাংলাদেশে চলমান সংস্কার কর্মসূচি সম্পর্কে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলকে অবহিত করেন। এছাড়াও এ সংস্কার কার্যক্রমগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য, জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের পাঁচ দশকের সম্পর্কের ভিত্তিতে, বিশেষত জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ কর্তৃক প্রযুক্তি ও নীতিগত সহায়তা দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের সময়ে এবং উত্তরণ পরবর্তী পর্যায়ে আন্তর্জাতিক সমর্থনের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন তিনি। কোভিড-১৯ মহামারি এবং বৈশ্বিক সংঘাতের ফলে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বাংলাদেশসহ অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য এসডিজি অর্জন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর অফিসের উন্নয়ন সহযোগিতাসহ, সামগ্রিকভাবে জাতিসংঘের অধিকতর সহযোগিতা কামনা করেন পররাষ্ট্র সচিব।
আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল লি জুনহুয়া, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটির চলমান সভায় বাংলাদেশের সভাপতিত্বের প্রশংসা করেন এবং জাতিসংঘ সচিবালয় থেকে সর্বাত্মক সমর্থনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনকে তিনি জানান, বিশেষত সরকারি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা খাতে সহায়তার মাধ্যমে, জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশকে সংস্কার প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে পারে।
জুনহুয়া বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ প্রকৃতপক্ষে একটি নতুন সূচনা এবং এলডিসি থেকে উত্তরণ হওয়া দেশগুলোর জন্য অগ্রাধিকারমূলক ব্যবস্থা থেকে সহায়তা অব্যাহত থাকা উচিত। একইসঙ্গে এসডিজি বাস্তবায়নের বিষয়ে ২০২৫ সালে স্পেনে অনুষ্ঠেয় আসন্ন চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি। আগামী বছরে অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলনে উদ্ভাবনী অর্থায়ন, টেকসই ঋণ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারসহ বৈশ্বিক উন্নয়ন সহায়তাকে শক্তিশালী করার প্রয়াস থাকবে বলে উল্লেখ করেন আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল জুনহুয়া।